নিজস্ব প্রতিবেদক:
জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রাকৃতিক দূযোর্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থেকে ঘর-বাড়ি হারিয়ে স্থানচ্যুতহতেবাধ্য হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান ভাঙ্গনে ছোট হতে হতে কুতুবদিয়া সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন গবেষকরা। বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানী গবেষকদের জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রভাবের জ্বলন্ত উদাহরণ হিসেবে কুতুবদিয়ার নাম সুপরিচিত।
কুতুবদিয়ার জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষরা নতুন স্থানে বসবাস করলেও বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং জীবন জীবিকার সংস্থান থেকে পিছিয়ে পড়ছে। জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষদের অধিকারভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। ইপসার চলমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা সম্পর্কে স্টেকহোল্ডারদের অবহিতকরণের লক্ষ্যে কুতবদিয়ার উপজেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষের সমস্যা ও অধিকার বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইপসা ।
ইপসার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. প্রবাল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ৩০নভেম্বর (সোমবার) অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ. এম. জহিরুলহায়াত।
অনুষ্ঠানে জলবায়ু স্থানচ্যুতি সমস্যা ও স্থানচ্যুত মানুষদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে ইপসার কার্যক্রম নিয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. প্রবাল বড়ুয়া। এতে, ইতিমধ্যে জলবায়ু স্থানচ্যুত পরিবার গুলোকে এনজিও সংস্থার ইপসার পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কমিউনিটি ভিত্তিক কিছু ক্ষতিগ্রস্ত জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষকে পুনবার্সন করা হবে বলে জানানো হয়।
ইপসার রিসেটেলম্যান্ট অফিসার জাকের হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় পুনর্বাসন প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করেন ইপসার প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার মোরশেদ আলম। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোহাম্মাদ হেলাল চৌধুরী, উপজেলা সহকারি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশিকুররহমান, সাংবাদিক হাছান কুতুবী, নজরুল ইসলাম, ইফতেখার শাহজীদ, মহি উদ্দিন কুতুবী ও আবুল কাসেম প্রমুখ ।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগে কুতবদিয়ার মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তজার্তিক সংস্থা সমূহ কুতুবদিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত বিপুল সংখ্যক মানুষকে ত্রাণ ও পুনবার্সন সহায়তা দিয়ে থাকে কিন্তু টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে স্থানচ্যুত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে আর দ্বীপের ক্রমাগত ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। জলবায়ু ওইসব স্থানচ্যুত মানুষদের জন্য পরিকল্পিত আবাসন, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অতীব জরুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ. এম. জহিরুল হায়াত বলেন, জলবায়ু স্থানচ্যুত মানুষের কল্যাণ মূলক কাজের জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্টান, উপজেলা প্রশাসন এবং বেসরকারি সংস্থা সমূহের এবং সংবাদকর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার পরামর্শ দেন এবং এই কাজে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্বক সহযোগিতা করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। মতবিনিময় সভা শেষে প্রধান অতিথি সেলাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
Leave a Reply